পরিচিত প্যাথলজিক্যাল ল্যাব। আপনার বাড়িতে এসে রক্ত নিয়ে যাচ্ছেন কালেক্টর। ঘরে বসেই রক্ত দিচ্ছেন। ঘরে বসেই রিপোর্ট পাচ্ছেন। আপনি নিশ্চিন্ত। আপনি কি নিরাপদ? যে কোনও অসুস্থতায় প্রায় প্রতি পরিবারেই নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা হয়। সকালে রক্ত নিয়ে যান কালেকটর। বিকেলে ল্যাব থেকে রিপোর্ট আসে। সব পাড়াতেই প্রায় একই সিস্টেম। ফাঁক থেকে যাচ্ছে না তো? একের পর এক রক্ত পরীক্ষা, বিস্তর খরচেও রোগ সারছে না? স্যাম্পল কালেকশনে ক্রুটির জন্যই ভুল রিপোর্ট আসছে না তো?
হতেই পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রক্তের রিপোর্টে যা ভুল আসে তার সিংহভাগই হয় নমুনা সংগ্রহের সময় ত্রুটির জন্য। রোগী কি খাওয়ার পর নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানের পরে রক্ত দিলেন? শরীর থেকে টেনে নেওয়ার পর রক্তটি সঠিক ভায়ালে রাখা হল কি? ভায়ালে রাখার পর সংগ্রাহক কি রক্তের নমুনাটি স্থিতাবস্থায় আসা পর্যম্ত অপেক্ষা করলেন? ভায়ালটি রোগীর কোড দিয়ে সঠিকভাবে লেবেলিং করা হল কি?
রক্ত দেওয়ার সময় দাতা নিজে স্থির ও স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছেন কি? পর্যায়টি যদি নির্ভুল উতরে যায় ভাল। তবে দুটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত এখনও বাকি। তাপমাত্রা এবং সময়। সাধারণত রক্তের রুট এরকম। সকাল ছটায় প্রথম ব্যক্তির কাছে রক্ত নিলেন কোনও সংগ্রাহক। তারপর পাঁচ বাড়ি ঘুরে পাঁচঘণ্টা পরে সব নমুনা নিয়ে পৌছলেন ল্যাবে। রক্ত দেওয়ার এতক্ষণ পরে নমুনা পৌছচ্ছে ল্যাবে। তা কি ঠিক থাকছে?
নমুনা ঠিক থাকার অন্যতম শর্ত কুলিং বক্স। এইভাবে একাধিক জায়গায় রক্ত নেওয়ার পর কুলিং বক্স নিয়ে কালেক্টর পৌছয় ল্যাবে। সেখানে আর একদফা রক্তের তাপমাত্রা মাপা হয়। আপনার বাড়িতে যিনি রক্ত নিতে আসেন তাঁর সঙ্গে নিশ্চয় কুলিং বক্স থাকে। নেই? তাহলে বুঝে নিন, বিপদটা কোথায়?
উচ্চ তাপমাত্রায় রক্তের প্রোটিন ভাঙতে শুরু করে। বিলিরুবিন টেস্ট ফোটো-সেনসেটিভ। স্যাম্পেলে সূর্যের আলো পড়লে সমস্যা। নিশ্চয় বুঝতে পারছেন রক্তের নমুনা সংগ্রহের সময় কতগুলি শর্ত পালন করতে হয়? আপনার বাড়ি থেকে যিনি রক্ত নিয়ে যাচ্ছেন, তিনি সবকটি নিয়ম মানছেন কি? যদি না মানেন, ঝুঁকি নেবেন না। ল্যাবে গিয়ে রক্ত দিন। এটা আপনার জীবনের ব্যাপার।